বুধবার ২২ মে ২০২৪
Online Edition

গাছমানব আবুল হোসেনের চিকিৎসায় ৬ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন

স্টাফ রিপোর্টার : হিউম্যান পারপোরিয়াস ভাইরাসে আক্রান্ত খুলনা জেলার পাইকগাছার আবুল হোসেন ওরফে আবুল বাজানদারের (২৬) চিকিৎসার জন্য ছয় সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। গতকাল রোববার দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের অধ্যাপক ডা. আবুল কালামকে প্রধান করে এ মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়।

বোর্ডের অন্য সদস্যরা হলেন-ঢামেক বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন, অধ্যাপক ডা. সাজ্জাদ খন্দকার, অধ্যাপক ডা. রায়হান আওয়াল, অধ্যাপক ডা. খান আবুল কালাম ও সহযোগী অধ্যাপক ডা. এমদাদুল হক। ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, আবুল হোসেনের আজ কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা দেওয়া হয়েছে। তিনি জানান, মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শ অনুযায়ী তার চিকিৎসা করা হবে। হিউম্যান পারপোরিয়াস ভাইরাসে আক্রান্ত এ রোগীর সংখ্যা পৃথিবীতে মাত্র তিনজন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে শনিবার সকালে ভর্তি হন আবুল হোসেন। বর্তমানে তিনি ৫১৫ নং কেবিনে চিকিৎসাধীন। তার হাতে ও পায়ে গাছের শেকড়ের মতো মাংসপেশী গজিয়েছে।

সামন্ত লাল সেন বলেন, এ রোগ সম্পর্কে আমাদের কোনো ধারণা নেই। এটা সাধারণত ট্রি-ম্যান নামে পরিচিত। এর আগে রোমানিয়া ও ইন্দোনেশিয়ায় এই রোগে আক্রান্ত মাত্র দু’জনকে শনাক্ত করা হয়েছে। আর বাংলাদেশে আবুল হোসেনই প্রথম। হিউম্যান পারপোরিয়াস ভাইরাসের কারণে এ রোগ হয়। গত ১০ বছর যাবত আবুল হোসেন এ রোগে ভুগছেন বলে জানান। এর ফলে তার দুই হাত এবং পায়ের কিছু অংশ বিকৃত হয়ে অনেকটা গাছের শেকড়ের মতো রূপ নিয়েছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে মায়ের পাশে বসে কথা বলছিলেন আবুল হোসেন। তার হাত দুটো কোলের ওপর রাখা, হাতের কব্জি থেকে বাকি অংশ বিকৃত হয়ে এমন রূপ নিয়েছে যে শুধুমাত্র হাত দুটো দেখলে সেটিকে বরং কোন গাছের শেকড় বলে মনে হতে পারে। দুই পায়ের পাতার কিছু অংশেও ছড়িয়ে পড়েছে এই রোগ।

জানা গেছে, আবুল হোসেন ভ্যান চালাতেন। কিন্তু এই রোগের কারণে গত ৬ বছর যাবত কোন কাজই করতে পারছেন না। প্রথমে ছোট ছোট আচুলি (আঁচিল) হইছিল। এরপর থেকে আমি গ্রামের ডাক্তার দেখাইছি, খুলনায় দেখাইছি, কলকাতায় দেখাইছি। কিন্তু অসুখ বাড়া ছাড়া কমেনি। এখন ডাক্তার বলছে অপারেশন করা লাগবে, বলেন তিনি। আবুল হোসেনের মা আমেনা বেগম বলছেন, তার ছেলে এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার পর সামাজিকভাবে তিনি মিশ্র প্রতিক্রিয়া পেয়েছেন। কেউ কেউ বলে খারাপ লাগে না, পাশে এসে বসে। আবার কেউ কেউ একটু দূরে দূরে থাকে। আমেনা বেগম বলেছেন, বিভিন্নজনের থেকে আর্থিক সহায়তা পেয়েএতদিন ছেলের কিছু চিকিৎসা চালিয়ে এসেছেন। আট ভাই-বোনের পরিবারের ষষ্ঠ সন্তান আবুল হোসেন বছর পাঁচেক আগে বিযয়ে করেছেন। এখন তিনি তিন বছরের এক কন্যা সন্তানের বাবা।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ